কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু টানেলের ৬১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এই টানেল নির্মাণের ফলে চট্টগ্রাম শহর চীনের সাংহাই নদীর মতো ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ মডেলে গড়ে উঠবে বলে জানিয়েছেন জানিয়েছেন ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু ।
বুধবার বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের টানা এক যুগ পূর্তি উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন ও জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রাখায় দেশবাসীকে সংগ্রামী শুভেচ্ছা জানিয়ে দেয়া এক বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী পদক্ষেপে বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসেছে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, যুদ্ধাপরাধের বিচার সম্পন্ন করে চলেছেন, তেমনি ছিটমহল সমস্যার সমাধান, সমুদ্রসীমানা বিরোধেরও নিষ্পত্তি করেছেন জানিয়ে আমু বলেন, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি সরকার গঠন করে টানা তিন মেয়াদে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পথ ধরেই তার কন্যা শেখ হাসিনা দেশকে নিয়ে যাচ্ছেন উন্নয়নের মহাসড়কে। বর্তমানে সারাদেশে চলছে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ। মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, রূপপুর পরমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, মাতার বাড়ি ও পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর , ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও কর্ণফুলী টানেলের কাজ এগিয়ে চলেছে দ্রুত গতিতে। ।এর ফলে পাল্টে যাবে দেশের অগ্রগতির দৃশ্যপট।
সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, করোনার মধ্যেও প্রতিটি ক্ষেত্রে রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। করোনা মোকাবেলায় যখন বিশ্বের উন্নত দেশগুলো পর্যুদস্ত, তখন প্রাথমিকভাবে সীমিত স্বাস্থ্য উপকরণ নিয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির মোকাবেলা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। ২০২০ সালে ২ হাজার ১৭৪ কোটি ১৮ লাখ (২১ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স দেশে এসেছে, যা আগের বছরের চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি। প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শিতায় গোটা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল।
ষাটের দশক থেকে দেশের মানুষ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কথা শুনে এলেও বাংলাদেশ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের যুগে প্রবেশ করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে ২০১০ সালে। পাবনার ঈশ্বরদীতে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যয়বহুল ১ লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে ২০২৪ সালে।
তিনি আরও বলেন, স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে মতপার্থক্যের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন, তখন অনেকেই একে অবাস্তব বলে সমালোচনা করেছিলো। সেই পদ্মা সেতু পূর্ণাঙ্গ রূপ পেতে শুরু করেছে। স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে সকল বাধা উপেক্ষা করে ইতিমধ্যে পদ্মা সেতুর সবগুলো স্প্যান বসানো হয়েছে। উন্নত রাষ্ট্রের মানুষের মতো বাংলাদেশের মানুষও মেট্রোরেলে চড়বে, সেই স্বপ্নও পূরণ হওয়ার পথে। কক্সবাজারের মাতারবাড়ী ও পটুয়াখালীর পায়রায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু টানেলের ৬১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এই টানেল নির্মাণের ফলে চট্টগ্রাম শহর চীনের সাংহাই নদীর মতো ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ মডেলে গড়ে উঠবে। এসবই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সততা , দেশপ্রেম আর সময় উপযোগী সিদ্ধান্তের ফসল।
আমির হোসেন আমু আরও বলেন, শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়নই নয়, সাধারণ মানুষের জীবনের মান উন্নয়ন, তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণ, অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষকে সামাজিক বেষ্টনীর আওতায় আনতে তাঁর গৃহীত সকল কর্মসূচি আজ দেশি ও আন্তর্জাতিক বিশ্বে স্বীকৃত। দেশকে দারিদ্র সীমার নিচে নামিয়ে আনা এবং নারীর ক্ষমতায়নে ও বিশ্বে রেকর্ড গড়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মিয়ানমারে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে মানবিক আশ্রয় দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বিশ্ব মানবতার জননী।
করোনা সংক্রমণের মধ্যেও দু-দু’টি ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলা করা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী ও সময়পোযোগী সিদ্ধান্তের ফলেই সম্ভব হয়েছে। এর ফলে দুর্ভিক্ষের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে বাংলাদেশ। শুভেচ্ছা বার্তায় আমির হোসেন আমু ১৪ দলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু ও উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করেন।